ওয়েবসাইট হল ইন্টারনেটে একটি পেজ বা সেট অফ পেজ যেখানে বিভিন্ন ধরণের তথ্য, লেখা, চিত্র, ভিডিও, অডিও, সংযোজ, গেম, ই-কমার্স সাইট, সেবাসমূহ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাধারণভাবে পাওয়া যেতে পারে। এই ওয়েবসাইট ইন্টারনেট ব্রাউজারে দেখা, পাওয়া এবং ব্যবহার করা যেতে পারে।
ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ধরণের তথ্য প্রদান করতে, সেবা দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়, এবং এটা ওয়েব ডেভেলপারদের দ্বারা তৈরি হয়। একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্যের ধরণ ভিন্নভিন্ন হতে পারে, যেমন খবর, ব্লগ, শিক্ষাগত, উপকার সংক্রান্ত, ওয়েবসাইটে আপনি তথ্য খুঁজতে, মতামত প্রকাশ করতে, কোনও ধরণের বাণিজ্যিক অপারেশন চালাতে, ব্লগ লেখাতে, শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য পেতে, গেম খেলতে, এবং বৃহত্তর ধরণের সামাজ কার্যক্রম পরিচালনা করতে ব্যবহৃত হয়।
ওয়েবসাইট হলো কোনো নির্দিষ্ট ওয়েব সার্ভারে রাখা বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল তথ্যের সমষ্টি যা আমরা ইন্টারনেট বা ল্যানের মাধ্যমে অ্যাক্সেস করতে পারি। যেমন ওয়েব পৃষ্ঠা, ছবি, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি। সহজভাবে যদি বলার চেষ্টা করি তাহলে বলা যায় যে, আমরা যখন গুগলে কিছু লিখে সার্চ করি তখন আমাদের সামনে উক্ত লিখা অনুসারে অনেকগুলি টাইটেল আসে। আমরা যদি কোনো একটি টাইটেল এ টাচ করি তাহলে আমরা যা দেখতে পাই সেটিই হলো একটি ওয়েবসাইট।
আপনি যদি চান যে আপনার একটি ওয়েবসাইট ইন্টারনেটে রান করবে তাহলে আপনাকে মূলত তিনটি কাজের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে-
ক) আপনাকে একটি ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
খ) ভালো মানের একটি ওয়েব হোস্টিং নিতে হবে
গ) ওয়েবসাইট সুন্দরভাবে ডিজাইন করতে হবে।
ওয়েবসাইটের ইতিহাস
টিম বার্নার্স-লি নামে একজন ব্রিটিস পদার্থবিদ সর্বপ্রথম ১৯৯০ সালে WWW(World Wide Web) তৈরি করেছিলেন। ১৯৯৩ সালের ৩০শে এপ্রিল থেকে এটি ফ্রি ছিলো। HTTP(Hypertext Transfer Protocol) এর আগে FTP(File Transfer Protocol) ব্যবহার করা হতো। সেখানে শুধুমাত্র একটি ডিরেক্টরি স্ট্রাকচার অফার করতো, এবং ডকুমেন্টসগুলি কোনো প্রকার ফরম্যাটিং ছাড়াই প্লেইন ট্রেক্সট উপস্থাপন করা হতো।
একটি ওয়েবসাইটের উপাদানসমূহ:
আমরা জানি যে ওয়েবসাইট হলো একটি সার্ভারে হোস্ট করা অনেকগুলো ওয়েবপেজের একটি সংগ্রহশালা। একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে অনেকগুলি উপাদানের প্রয়োজন হয়, চলুন আমরা উপাদানগুলি দেখে আসি।
ওয়েবহোস্ট: ওয়েবহোস্ট হলো সেই জায়গা যেখানে আমরা আমাদের ওয়েবসাইটটিকে ফিজিক্যালি অবস্থান করাই। ওয়েবপেজগুলির গ্রুপকে যখন একটি ওয়েব সার্ভারে হোস্ট করা হয় তখন এক ওয়েবসাইট বলা হয়।
অ্যাড্রেস: অ্যাড্রেস বলতে একটি ওয়েবসাইটের ঠিকানা বোঝায় যা ইউআরএল নামে পরিচিত। যখন আমরা কোনো ওয়েবসাইট খুলতে চাই তখন আমাদের অ্যাড্রেস বারে ওয়েবসাইটের অ্যাড্রেস বা ইউআরএল দিয়ে সার্চ করতে হয়। প্রতিটি ওয়েবসাইটেরও আলাদা আলাদা ইউআরএল থাকে।
হোমপেজ: একটি ওয়েবসাইটের জন্য হোমপেজ হলো খুব কমন এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি ওয়েবসাইটের প্রধান ইউআরএল দিয়ে ভিজিট করলে বা প্রথম ওয়েবপেজে যেটি প্রদর্শিত হয় সেটাই হলো হোমপেজ। একটি ওয়েবসাইটের জন্য হোম পেজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কেননা এটিই ওয়েবসাইটের সৌন্দর্য দান করে।
ডিজাইন: আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর ধরে রাখতে ওয়েবসাইটের ডিজাইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ডিজাইন একটি ওয়েবসাইটের সামগ্রিক সৌন্দর্য প্রদান করে থাকে।
কন্টেন্ট: ওয়েবসাইটে থাকা প্রতিটি পেজ ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তুকে উপস্থাপন করে। ওয়েবপেজের ভালো কন্টেন্ট ওয়েবসাইটটিকে আরও ইফেক্টিভ এবং আকর্ষণীয় করে তোলে।
নেভিগেশন স্ট্রাকচার: একটি ওয়েবসাইটের নেভিগেশন স্ট্র্যাকচার হলো ওয়েবসাইটের পেজগুলির ক্রম, এবং কোন পেজের সাথে কোন পেজের লিঙ্ক রয়েছে তার সংগ্রহ। এটি সাধারণত একটি নেভিগেশন মেনু দ্বারা একসাথে রাখা হয়।
ওয়েবসাইট প্রধাণত দুই প্রকারের হয়ে থাকে-
১) স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট
২) ডায়নামিক ওয়েবসাইট
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট (Static Website):
এই ধরণের ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট স্থির এবং অপরিবর্তনশীল, অর্থাৎ এই ধরণের ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট ব্যাকেন্ড সিস্টেমের প্রয়োগ করা হয় না। এই ধরণের ওয়েবসাইটে স্থায়ী তথ্য, যেমন কোম্পানি প্রেজেন্টেশন, কন্ট্যাক্ট ইনফরমেশন, ব্লগ পোস্ট, প্রোডাক্ট লিস্টিং ইত্যাদি থাকতে পারে।
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটের কিছু বৈশিষ্ট্য নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
ক) স্থায়ী কন্টেন্ট: এই ধরণের ওয়েবসাইটের পৃষ্ঠা ও কন্টেন্ট স্থায়ী এবং পরিবর্তন না হওয়ার সুবিধা থাকে।
খ) HTML এবং CSS: স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটগুলি মূলভূতভাবে HTML (Hypertext Markup Language) এবং CSS (Cascading Style Sheets) ব্যবহার করে তৈরি হয়, এবং এদের মাধ্যমে কন্টেন্ট প্রদর্শন এবং স্টাইলিং করা হয়। কোন ধরনের বেকেন্ড প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করা হয় না। তবে ওয়েবসাইটকে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় করে তুলতে JavaScript ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
গ) নির্ধারিত লেখক: স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটে আপনি কোন কিছু পরিবর্তন করতে চাইলে ওয়েব ডেভেলপারের সাহায্য প্রয়োজন হয়, কারণ সাধারণভাবে কোনও কিছু আপডেট করতে ব্যবহারকারীর কোন কিছু আপডেট করতে পারে না। তবে HTML এবং CSS সম্পর্কে বেসিক ধারণা থাকলে আপনি তথ্য, ছবি, কন্টেন্টসহ অন্যান্য সব কিছু পরিবর্তন করতে পারবেন।
ঘ) প্রস্তাবিত স্থায়ী তথ্য: স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটে অধিকাংশ তথ্য সাধারণভাবে প্রস্তুত এবং স্থায়ী থাকে, এবং এখানে কোনও ব্লগ, নিউজ সেকশন, ব্যবসায়িক পর্যালোচনা, বা সাময়িক আপডেট সাধারণভাবে খোলামেলা থাকে না। যেমন আপনি ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিতে পারেন, বন্ধুদের পোস্টে লাইক কমেন্টস করতে পারেন। স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটে এসবের কোন সুযোগ নেই।
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটের বৈশিষ্ট্য-
১। ওয়েবসাইটের পেইজ এর সংখ্যা নির্দিস্ট থাকে।
২। কোন ডেটাবেজ থাকে না ।
৩। কেবলমাত্র সার্ভার থেকে ক্লায়েন্টে একমুখী কমিউনিকেশন হয়।
৪। হাফ-ডুপ্লেক্স মোডে ডেটা ট্রান্সফার হয়।
৫। কোনও প্রোগ্রামিং ভাষার প্রয়োজন হয় না।
৬। স্ট্যাটিক ওয়েবপেইজের এক্সটেনশন .html বা .htm হয়।
৭। কোন ব্যাক-এন্ড থাকে না শুধু ফ্রন্ট-এন্ড থাকে।
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটের সুবিধা-
১। ওয়েবসাইট ডেভলোপ করা সহজ। ফলে খরচ কম।
২। খুব দ্রুত লোড হয়।
৩। সহজেই ওয়েবপেইজের লে-আউট পরিবর্তন করা যায়।
৪। ডেটাবেজ না থাকায় অধিক নিরাপদ।
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটের অসুবিধা-
১। ওয়েবসাইটে তথ্য যুক্ত, আপডেট এবং ডিলিট করার জন্য কোড পরিবর্তন করতে হয়।
২। ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ইনপুট নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে না।
৩। ওয়েবসাইটের তথ্য বেশি হলে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়।
৪। ওয়েবসাইটে কোন ফাংশনালিটি থাকে না।
ডায়নামিক ওয়েবসাইট (Dynamic Website):
ডায়নামিক ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট দ্রুত পরিবর্তন করা যেতে পারে এবং ব্যবহারকারীর নীতি অনুসারে কাস্টমাইজ করা যায়, সাধারণভাবে এই ধরণের ওয়েবসাইটের জন্য ডাটাবেস ব্যবহার করা হয়।
ওয়েবসাইটের ধরণ এবং কাজ অনুসারে ওয়েবসাইট বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যা নিম্নলিখিত:
নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইট (News Portal Website) :
নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইট হলো সংবাদ, খবর, সংবাদ সংক্রান্ত লেখা, ছবি, ভিডিও বা অন্যান্য মিডিয়া প্রদান করে। এই ধরণের ওয়েবসাইটে বিভিন্ন নিউজ পড়া, সংবাদ সংস্থা, ব্লগার, জার্নালিস্ট, ই-মিডিয়া প্রতিষ্ঠান, এবং অন্যান্য সংবাদ সার্ভিস প্রদান করে এবং ব্যবহারকারীদের নতুন ও পুরানো সংবাদ পড়তে এবং জানতে সাহায্য করে। নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইটে সাধারণভাবে বিভিন্ন সেকশন থাকে, যেখানে প্রতিষ্ঠান নিউজ, আন্তর্জাতিক নিউজ, খেলাধুলা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ব্যান্ডারবিশ, ব্যবসা, বিনোদন, জীবনযাপন, স্বাস্থ্য, এবং অন্যান্য বিষয়ে নিউজ সংবাদ প্রদান হয়। নিউজ পোর্টাল ওয়েবসাইট সাধারণভাবে পাঠকদের নিউজ প্রকাশনে সংবাদের মূল উৎস হিসেবে কাজ করে এবং ব্যবহারকারীদের আপনার প্রাথমিক সংবাদে আপডেট থাকতে সাহায্য করে। যেমন: prothomalo.com, ittefaq.com.bd, bdnews24.com ইত্যাদি।
ই-কমার্স ওয়েবসাইট:
ই-কমার্স ওয়েবসাইট হলো একটি ওয়েব পেজ বা ইন্টার্নেটের পৃষ্ঠা, যা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির দ্বারা তৈরি হয় এবং বিভিন্ন প্রকারের প্রোডাক্ট বা সেবা প্রদান করে এবং কাস্টমারদের সাথে ই-কমার্স (ইলেকট্রনিক কমার্স) মাধ্যমে লেনদেন করার সুযোগ প্রদান করে। এই ধরণের ওয়েবসাইট প্রধানভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ কেনাকাটা, ডিজিটাল বিপণন, ব্যবসা পরিচালনা, লেনদেন, স্টক প্রবন্ধন, এবং অন্যান্য ই-কমার্স গোষ্ঠীর ব্যবহারে এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে। যেমন: daraz.com.bd, chaldal.com, startech.com.bd ইত্যাদি
ব্লগিং ওয়েবসাইট (Blogging Website):
এই ধরণের ওয়েবসাইটে লেখা, পোস্ট, ইনফরমেশন প্রদান করা হয়, যা সময় সময়ে আপডেট করা হয় এবং সাধারণভাবে ক্যাটেগরি ভিত্তিক।
একটি ব্লগ ওয়েবসাইট হলো একটি ওয়েবসাইট, যেখানে ব্লগার এবং লেখকরা বিভিন্ন বিষয়ে লেখা, পোস্ট, অনুবাদ, আলোচনা, এবং রিভিউ প্রদান করে। এই পোস্টগুলি সাধারণভাবে সামাজিক বন্ধুদের, অন্য ব্লগারদের, বা সাধারণ পাঠকদের সাথে সম্পর্ক করার সুযোগ প্রদান করে এবং সাধারণভাবে সমৃদ্ধ কমিউনিটি তৈরি করে। উদাহরণস্বরূপ amardailynews.com, wirebd.com, hoichoibangla.com, instabangla.com ইত্যাদি
ই-লার্নিং ওয়েবসাইট
ই-লার্নিং ওয়েবসাইট হলো একটি ওয়েবসাইট, যা ব্যবহারকারীদের শেখা, শিখা, এবং সবকিছুতে উন্নত হতে সাহায্য করে। এই ধরণের ওয়েবসাইট বিভিন্ন ধরণের শিক্ষানুভব, অনলাইন শিক্ষা, টিউটরিং, কোর্স, লেখা, ভিডিও পাঠ, প্রশিক্ষণ, ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন বিষয়ে শেখানোর উপায় প্রদান করে। যেমন: udemy.com, 10minuteschool.com, eshikhon.com ইত্যাদি।
সোশ্যাল ওয়েবসাইট:
সোশ্যাল ওয়েবসাইট হলো ব্যবহারকারীদের সাথে সোশ্যাল ইন্টারেকশন এবং যোগাযোগের জন্য তৈরি করা হয়। এই ধরণের ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন সামাজিক ক্রিয়া, তথ্য ভাগাভাগি, আপডেট, চ্যাট, ছবি, ভিডিও, লিংক, এবং অন্যান্য মিডিয়া শেয়ার করতে সাহায্য করে। সাধারণভাবে, এই ধরণের ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারীদের স্বত্ত্ব, আপডেট, এবং অন্য ব্যক্তিগত তথ্য সেভ করা থাকে, এবং তাদের সাথে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তৈরি করা যেতে পারে। জনপ্রিয় সোশ্যাল সাইট যেমন: facebook.com. twitter.com, instagram.com ইত্যাদি। তবে সোশাল ওয়েবসাইটে কখনো ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না।
কমিউনিটি ফোরাম ওয়েবসাইট:
কমিউনিটি ফোরাম ওয়েবসাইট হলো একটি ওয়েবসাইট, যা একটি অনলাইন কমিউনিটির সদস্যদের মধ্যে আলোচনা, প্রশ্নোত্তর, সাহায্য, এবং সামগ্রিক বিনামূল্যে প্রদান করার জন্য তৈরি হয়। এই ধরণের ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের আলোচনা করতে এবং সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে, সাধারণভাবে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ থাকতে পারে, যেমন: ফোরাম বোর্ড, থ্রেড এবং পোস্ট, মডারেশন, ব্যবহারকারী প্রোফাইল ইত্যাদি। brightbangladeshforum.org, bidyanondo.org ইত্যাদি ওয়েবসাইটগুলো কমিউনিটি ফোরাম ওয়েবসাইটের আওতাভূক্ত।
ওয়েবসাইটের সুবিধা
সামগ্রিক তথ্য: ওয়েবসাইট আপনাকে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য প্রদান করে, যেমন আপনার সম্পাদকিয় উদ্দেশ্য, কোম্পানির বিবরণ, প্রোডাক্ট বা সেবা, যোগাযোগের তথ্য, আপনার কাজের সময়সূচী এবং আপনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ।
সহজ ন্যাভিগেশন: ওয়েবসাইটের মেন্যু এবং লিঙ্ক সহজভাবে ওয়েবসাইটে বিচরন করার সুযোগ দেয় এবং বিভিন্ন পৃষ্ঠা এবং সেকশনে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
আত্ম-প্রকাশ: ওয়েবসাইট আপনাকে আপনার এবং আপনার সম্পাদকিয় সামগ্রিক নির্দেশনা পরিচালনা করতে সাহায্য করতে পারে, এবং আপনি নিজের প্রোফাইল সম্পাদনা এবং পরিচালনা করতে সহজ করে।
সার্চ ক্যাপাবিলিটি: গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে যে কেউ আপনার ওয়েবসাইটটি খুঁজে বের করতে পারে। ওয়েবসাইট একটি সার্চ প্রবেশযোগ্য বক্স বা সার্চবার উপস্থাপন করে, যেটি ব্যবহারকারীদের ওয়েবসাইটে যে কোন কিছু খোঁজার সুযোগ প্রদান করে।
ব্লগ এবং প্রকাশনা: ওয়েবসাইটে ব্লগ সেকশন যোগ করে স্বল্পব্যাপী প্রকাশনা করতে পারেন এবং নিজের ব্যক্তিগত লেখা বা নিজের প্রতিষ্ঠানের সংবাদ জনগণের কাছে প্রকাশ করতে পারেন।
ব্যবহারকারীর পূর্বাভাস: ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার পূর্বাভাস দেওয়া যেতে পারে, যা কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স সাজানোর সাথে সাথে গ্রাহকের আগ্রহ সৃজন করতে সাহায্য করে। যেমন দেখবেন, অ্যাপল, স্যামসাংসহ অন্যান্য নামিদামী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কোন প্রোডাক্ট বাজারে আসার আগে তাদের ওয়েবসাইটে প্রোডাক্টের বিস্তারিত তথ্য আপলোড করে থাকে শুধুমাত্র তাদের গ্রাহকদের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য।
মোবাইল সুবিধা: ওয়েবসাইটটি মোবাইল ডিভাইসে সঠিকভাবে লোড হওয়া উচিত, যাতে ব্যবহারকারীরা মোবাইল ডিভাইস দিয়ে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সাহায্য পেতে পারে।
যোগাযোগের সুবিধা: ওয়েবসাইটে যোগাযোগের ফরম বা ইমেইল দেওয়া থাকলে তার মাধ্যমে সেবা প্রার্থিরা ইমেইল ঠিকানা, মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে আপনার থেকে সেবা নিতে পারবে। এবং ব্যবহারকারীদের আপনার বার্তার জবাব দেওয়া সম্ভব হবে।
ওয়েবসাইটের সুবিধা সংক্রান্তে আরো সহজভাবে বলতে গেলে:
১. ঘরে বসেই কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয়া যায়।
২. ওয়েবসাইট থেকে দ্রুত তথ্য সংরক্ষণ ও আরহনণ করা যায়।
৩. ওয়েবপেজে বিভিন্ন ধরনের স্ত্রিপ্ট ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করা যায়।
৪. ওয়েবসাইটগুলোর মাধ্যমে বিনা মূল্যে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যায়।
৫. বিশ্বের যে কোন প্রান্ত থেকে যে কোন সময় তথ্যেও আদান -প্রদান করা যায়।
৬. ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হয়।
৭. ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যে কোন তথ্য, অডিও,ভিডিও,এবং ছবি ইত্যাদি প্রচার করা যায়।
৮. ওয়রবসাইটের মাধ্যমে সামাজিক, রাজনৈতিক,সংস্কৃতিকসহ প্রভৃতি বিষয়ে নিজস্ব মতামত ইপস্থাপন করা যায়।
৯. যে কোন বিষয় যেমন-কোন নির্দিষ্ট। স্থানের তাপমাত্রা, বাস, রেল, ও প্লেনের সময়সূচি, ভাড়া,ইত্যাদি জানা যায়।
১০. ঘরে বসে বিশ্বের নামকরা লাইব্রেরি থেকে বই পড়া বা ডাউনলোড করা যায়, এমনকি বিদেশী ডিগ্রীও অর্জন করা যায়।
ডাইনামিক ওয়েবসাইটের বৈশিষ্ট্য -
১। ওয়েবসাইটের পেইজ এর সংখ্যা নির্দিস্ট থাকে না।
২। ডেটাবেজ থাকে।
৩। ফলে কুয়েরি করে যেকোন তথ্য বের করা যায়।
৪। সার্ভার থেকে ক্লায়েন্টে এবং ক্লায়েন্ট থেকে সার্ভারে উভয়মুখী কমিউনিকেশন হয়।
৫। ফুল-ডুপ্লেক্স মোডে ডেটা ট্রান্সফার হয়।
৬। ডাইনামিক ওয়েবপেইজের এক্সটেনশন .php বা .asp বা .jsp হয়।
৭। ব্যাক-এন্ড এবং ফ্রন্ট-এন্ড উভয়ই থাকে।
৮। প্রোগ্রামিং ভাষার প্রয়োজন হয়।
ডাইনামিক ওয়েবসাইটের সুবিধা-
১। ওয়েবসাইট চালু অবস্থায় কোড পরিবর্তন না করেই খুব সহজে তথ্য যুক্ত, আপডেট এবং ডিলিট করা যায়।
২। নির্দিস্ট ব্যবহারকারীর জন্য নির্ধারিত ওয়েবপেইজ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যায়। অর্থাৎ ব্যবহারকারীর প্রোফাইল তৈরি করা যায়।
৩। অনেক বেশি তথ্যবহুল হতে পারে।
৪। ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ইনপুট নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে।
৫। ওয়েবসাইটে যেকোন ফাংশনালিটি যুক্ত করা যায়।
ডাইনামিক ওয়েবসাইটের অসুবিধা-
১। ডেটাবেজ ব্যবহৃত হয়, ফলে লোড হতে বেশি সময় নেয়।
২। ওয়েবসাইট ডেভলোপ করা কঠিন। ফলে খরচ বেশি।
স্ট্যাটিক ও ডাইনামিক ওয়েবসাইটের পার্থক্য
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট | ডাইনামিক ওয়েবসাইট |
যে সকল ওয়েবসাইটের তথ্য সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাদেরকে স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট বলা হয়। | যে সকল ওয়েবসাইটের তথ্য সাধারণত পরিবর্তনশীল তাদেরকে ডাইনামিক ওয়েবসাইট বলা হয়। |
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট শুধু HTML এবং CSS দিয়েই তৈরি করা যায়। | ডাইনামিক ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য HTML,CSS এর সাথে সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং ভাষা যেমন- PHP বা ASP.Net বা JSP এবং ডেটাবেজ যেমন – MySQL বা SQL বা Oracle ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। |
ওয়েবসাইটের পেজ সংখ্যা নির্দিস্ট থাকে। | ওয়েবসাইটের পেইজ এর সংখ্যা নির্দিস্ট থাকে না। |
কোন ডেটাবেজ থাকে না । | ডেটাবেজ থাকে। |
ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ইনপুট নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে না। মন্তব্য, ব্লগ পোস্ট, প্রোফাইল তৈরি ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকে না। | ব্যবহারকারীর কাছ থেকে ইনপুট নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে। মন্তব্য, ব্লগ পোস্ট, প্রোফাইল তৈরি ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকে। |
কেবলমাত্র সার্ভার থেকে ক্লায়েন্টে একমুখী কমিউনিকেশন হয়। | সার্ভার থেকে ক্লায়েন্টে এবং ক্লায়েন্ট থেকে সার্ভারে উভয়মুখী কমিউনিকেশন হয়। |
ডেটাবেজ না থাকায় অধিক নিরাপদ। | তুলনামূলক কম নিরাপদ। |
ওয়েবসাইটে কোন ফাংশনালিটি থাকে না। | ওয়েবসাইটে যেকোন ফাংশনালিটি যুক্ত করা যায়। |
প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যবহার হয় না। | প্রোগ্রামিং ভাষার ব্যবহার হয়। |
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটের সকল ভিজিটর একই তথ্য দেখতে পায়। | নির্দিস্ট ব্যবহারকারীর জন্য নির্ধারিত ওয়েবপেইজ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা যায়। |
ওয়েবসাইট ডেভলোপ করা সহজ। ফলে খরচ কম। | ওয়েবসাইট ডেভলোপ করা তুলনামূলক কঠিন। ফলে খরচ বেশি। |
দ্রুত লোড হয়। | লোড হতে তুলনামূলক বেশি সময় নেয়। |
স্ট্যাটিক ওয়েবপেইজের এক্সটেনশন .html বা .htm হয়। | ডাইনামিক ওয়েবপেইজের এক্সটেনশন .php বা .asp বা .jsp হয়। |