আমার সম্পর্কে - SMH Amiri

সর্বশেষ লিখাসমূহ

আমার সম্পর্কে

সৈয়দ মাহবুব হাসান আমিরী, জন্ম ০১ জানুয়ারী ১৯৮১ সালে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার টাটেরা গ্রামে। পেশায় একজন শিক্ষক, যা আমার ব্রত। যখন থেকে ‘অ’ ‘আ’ ‘ক’ ‘খ’ শিখি তখন থেকেই দেখেছি যে, আমার বাবা ছেলে মেয়েদের পাঠদান করতেন। আর তখনই আমার মনের ভেতর এক অজানা আসক্তি ধীরে ধীরে শিক্ষকতার প্রতি উন্মোখ হতে থাকে। আমার বাবা সৈয়দ আতিকুর রহমান আমিরী পেশায় ছিলেন একজন শিক্ষক। তিনি বড়ধুশিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রায় আমার জন্মের চারদিন পর (০৪.০১.১৯৮১) থেকে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং ২০১২ সালে অবসর গ্রহণ করেন। অত্র প্রতিষ্ঠানে তিনি সুপারিনটেনডেন্ট পদে নিযুক্ত ছিলেন। বাড়িতে আমাকে পড়ানোর জন্য কোন গৃহশিক্ষক ছিলনা, আমার বাবা-মা সবসময় আমাকে পড়াতেন। আর আমার মা খন্দকার জেবন নেসা সুগৃহীনি এবং আমার প্রথম শিক্ষক, যার কাছ থেকে ‘অ’ ‘আ’ ‘ক’ ‘খ’ শিখেছি। আমার মায়ের কাছে শিক্ষার সেই মূহুর্তগুলি আমাকে এখনো তাড়া করে আমার সেই শৈশবে।

.com/img/a/


১৯৯৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি, ১৯৯৯ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি এবং ২০০২ সালে বিএসএস পাশ করেই আমি আমার ব্রতে মনোনিবেশ করি সাহেবাবাদ লতিফা ইসমাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে (যে বিদ্যালয় থেকে আমি এসএসসি পাশ করেছি)। আমার ইনডেক্স নাম্বার ছিল ১০৩৩৬৮০। মাঝে ২০০০ সালে ঢাকার বাংলা মোটর থেকে কম্পিউটার সাইন্স-এ একটি ডিপ্লোমা কোর্স করি। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে শিক্ষকতা পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করলেও গণনা করা হয় অক্টোবর ২০০৪ সাল থেকে। অতঃপর শিক্ষকতা পেশায় নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করতে থাকি। আমার বাবার অনুপ্রেরণায় আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে রেজিষ্ট্রেশন করি এবং সফলতার সাথে প্রিলিমিনারি ও ফাইনাল সম্পন্ন করি। ২০০৫ সালের ফাইনাল পরীক্ষায় পাশ করেছি, যা অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে।

.com/img/a/


আমার পাঠদান প্রক্রিয়াকে আরো কার্যকরী ও বিজ্ঞান সম্মতভাবে সম্পন্ন করার জন্য আমি বি.এড প্রশিক্ষণ গ্রহণের প্রয়োজন অনুভব করি, কারণ শিক্ষকতা পেশায় বি.এড প্রশিক্ষণের বিকল্প নাই। অতঃপর ২০১১ সালে বি.এড (প্রথম শ্রেণি) প্রোগ্রাম এবং ২০১২ সালে এম.এড (প্রথম শ্রেণিতে প্রথম) প্রোগ্রাম সফলতার সাথে সম্পন্ন করি এবং প্রোগ্রামের থিসিস কোর্সে “টেকসই উন্নয়নের জন্য শিক্ষা” শিরোনামে একটি থিসিস সম্পন্ন করি। । এরই মধ্যে আমার মনে দাঁনা বেধে উঠলো যে, আমি আমর শিক্ষার আলোকে আরো প্রজ্জোলিত করবো। অত:পর আমি এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে “ইনফরমেশন সাইন্স এন্ড লাইব্রেরী ম্যানেজমেন্ট” বিষয়ে মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হই। সেই কোর্সে ২০১৪ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে সম্পন্ন করি এবং ব্যাচের সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করি। উক্ত প্রোগ্রামের থিসিস কোর্সে “Impact of ICT in Libraries ” শিরোনামে একটি থিসিস সম্পন্ন করি। এখনো মাথা থেকে অধ্যয়ন করার চিন্তা ঝেড়ে ফেলতে পাড়ছিনা।

.com/img/a/


২০০৯ সালের জুন মাসে আমি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে যোগদান করি। এখানে যোগদানের পরপরই আমি মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ক্লাসে পাঠদানের বিষয়টি রপ্ত করি এবং মাঝে মাঝে সুযোগ ও সময় পেলে এভাবে পাঠদান করতাম। তন্মধ্যে ২০১০ সাল থেকে শুরু করে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ক্লাসে পাঠদানের বিষয়ে বিভিন্ন দেশী বিদেশী প্রশিক্ষণ গ্রহন করি। ২০১৩ সালের জুন মাসে শিক্ষক বাতায়নের যাত্রার শুরু থেকে আমি শিক্ষক বাতায়নের সাথে সংস্পৃক্ত হই। ক্রমে ক্রমে আমি শিক্ষক বাতায়নে ডিজিটাল কন্টেন্ট আপলোড করতে শুরু করি এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শিক্ষক বাতায়নে একজন জনপ্রিয় শিক্ষক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি। সেই সূত্র থেকে শিক্ষক বাতায়ন কর্তৃপক্ষ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রোগ্রাম এটুআই থেকে ২০১৩ সালের সেরা ২২ জন শিক্ষকের মধ্যে আমি একজন মনোনিত হই। ২০১৪ সালের ৬ মে কক্সবাজারের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর নিকট থেকে সেরা শিক্ষকের পুরস্কার গ্রহন করি।

.com/img/a/


২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কম্পিউটার স্কিল-আপ ট্রেনিং প্রোগ্রামে অংশগ্রহন করে সেখানে প্রথম স্থান দখল করি। সেই সুবাদে ১৯ আগস্ট ২০১৪ সালে মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর নিকট থেকে পুরস্কার গ্রহন করি। উক্ত ট্রেনিং প্রোগ্রামের উচ্চতর ট্রেনিং-এর জন্য প্রথম স্থান অধিকারী শিক্ষক হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে সাংমেইয়ং ইউনিভার্সিটিতে ২৪ আগস্ট ২০১৪ সালে গমন করি। দক্ষিণ কোরিয়ায় ২৩ আগস্ট ২০১৪ সাল থেকে ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সাল পর্যন্ত অবস্থান করি।

.com/img/a/


২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে আরম্ভ করি এক মহাকর্মযজ্ঞের। যা হলো মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকগণের জন্য "মডেল কন্টেন্ট নির্মাণ"। আমার বিষয় ছিল আইসিটি। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আইসিটি বিষয়ের মডেল কন্টেন্ট নির্মাণে অনেক শ্রম, মেধা ও বিনিদ্র রজনী দিতে হয়েছে। তারপরও জাতীয় কল্যানে কাজ, তাই যেভাবেই হোক কাজটি সম্পন্ন পর্যন্ত সংযুক্ত ছিলাম (আগস্ট ২০১৬)।

.com/img/a/


২০১৬ সালের ১৪ মার্চ আমার শ্রদ্ধাভাজন পিতা জনাব মাওলানা সৈয়দ আতিকুর রহমান পরলোকগমণ করেন। এ বছরেই জুন মাসে আমি ৪৬ কর্মদিবসের এডভান্স আইসিটি মাস্টার ট্রেইনার ট্রেইনিং কোর্স সম্পন্ন করি ঢাকা সরকারি টিচার্স ট্রেইনিং কলেজ থেকে। আগস্ট থেকেই মাস্টার ট্রেইনার হিসেবে কাজ আরম্ভ করি বিভিন্ন টিচার্স ট্রেইনিং কলেজে। আমি গিয়েছিলাম রংপুর টিচার্স ট্রেইনিং কলেজ, রাজশাহী টিচার্স ট্রেইনিং কলেজ ও কুমিল্লা টিচার্স ট্রেইনিং কলেজে। এরই মধ্যে এ বছরই আবার অধ্যয়নের জন্য ঢাকার বনানীতে অবস্থিত 'ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া'-তে ভর্তি হই এম.এসসি ইন এমসিএ কোর্সে। কোর্সটি শেষ হয় ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে।  এম.এসসি ইন এমসিএ কোর্সে আমার একটি প্রজেক্ট ছিল যার শিরো নাম "Expert Educational Personnel System" যেখানে বাংলাদেশের সকল এডুকেশন পার্সনেলদের একসাথে দেখা যায়, এবং তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

.com/img/a/


২০১৭ সালে শিক্ষকদের জাতীয় মাল্টিমিডিয়া কন্টেন্ট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। প্রথমে জেলা ভিত্তিক, এরপর বিভাগ ভিত্তিক ও সর্বশেষ জতীয় পর্যায়ের তালিকায়ও নাম অর্ন্তভুক্ত করাতে সক্ষম হই। প্রতিযোগিতা শেষে সেরা ১৫ এর মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থান অর্জন করি। এর পর থেকে আমার পথ হয়ে গেল ভিন্ন। কেবল সরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণেই নয়, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও সময়ে সময়ে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ আরম্ভ করি।