দশম : ব্যবহারিক পরামর্শ - SMH Amiri

সর্বশেষ লিখাসমূহ

দশম : ব্যবহারিক পরামর্শ

 তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারিক বা হাতে কলমে শিক্ষা সকল শিক্ষার্থীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কম্পিউটার ল্যাবে শিক্ষার্থীদের কাজসমূহ করার সুযোগ পেয়ে থাকে। প্রতিটি ব্যবহারিক কাজকে আলাদা আলাদা করে শিক্ষার্থীর দৈনন্দিন কাজ করে নেয়া উচিৎ। ব্যবহারিক সকল কাজগুলোকে নির্দিষ্টভাবে কতগুলো পরীক্ষণে ভাগ করে নিলে খুব দ্রুত ব্যবহারিক কাজগুলো সম্পন্ন করা যায়। কারণ, ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য শিক্ষার্থীরা খুব বেশী সময় পায়না।


নবম-দশম শ্রেণির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পাঠ্য বইটি ছয়টি অধ্যায়ে বিভক্ত। ছয়টি অধ্যায় হলো তথ্য ও যােগাযোগ প্রযুক্তি এবং আমাদের বাংলাদেশ, কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা, আমার শিক্ষায় ইন্টারনেট, আমার লেখালেখি ও হিসাব, মাল্টিমিডিয়া ও গ্রাফিক্স এবং ডাটাবেজ-এর ব্যবহার। এর মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় অধ্যায় ব্যতীত অন্য চারটি অধ্যায়ের ব্যবহারিক রয়েছে। চারটি অধ্যায়ের যে ব্যবহারিক পরীক্ষণসমূহ শিক্ষার্থীদের করা প্রয়োজন -


ক. কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা: 

  • প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সফটওয়্যার ইন্সটল ও আনইন্সটল করা;
  • এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইন্সটল;
  • পাসওয়ার্ড এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা;
  • সাধারণ ট্রাবলশুটিং (৩৭-৪১ পৃষ্ঠা)

খ. আমার লেখালেখি ও হিসাব:

  • ওয়ার্ড প্রসেসর ব্যবহারের কৌশল;
  • ওয়ার্ড প্রসেসরে সম্পাদনা;
  • স্প্রেডশীট ব্যবহারের কৌশল;
  • স্প্রেডশীট ব্যবহার করে হিসাব-নিকাশ করা;

গ. মাল্টিমিডিয়া ও গ্রাফিক্স: 

  • প্রেজেন্টেশন সম্পাদনা (স্লাইড তৈরী, এ্যানিমেশন, শব্দ ও ভিডিও);
  • এডোব ফটোশপে ছবি সম্পাদনা;
  • এডোব ফটোশপের বিভিন্ন টুল ব্যবহার;
  • এডোব ইলাসট্রেটরে ছবি তৈরীর কৌশল;
  • এডোব ইলাসট্রেটরের প্রয়োজনীয় টুল ব্যবহার;

ঘ. ডাটাবেজ-এর ব্যবহার:

  • ডাটাবেজ তৈরী করা;
  • ডাটাবেজ সম্পাদনা করা;
  • ডাটাবেজ কোয়েরি ও রিপোর্ট তৈরী করা;


শিক্ষার্থীকে প্রতিটি পরীক্ষণের জন্য রিপোর্ট লেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে রিপোর্টগুলো শিক্ষার্থী ব্যবহারিক পরীক্ষার মৌখিক পরীক্ষার সময় উপস্থাপণ করতে হবে। তাই শিক্ষার্থীরা আজকের ব্যবহারিক কাজের রিপোর্ট পরবর্তী ক্লাসে শিক্ষকের নিকট জমা দিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে নিতে হবে। রিপোর্ট লেখার জন্য শিক্ষার্থীরা ব্যবহারিক খাতা বা ফুলস্কেপ অপসেট কাগজ ব্যবহার করতে পারে। যদি শিক্ষার্থীরা ফুলস্কেপ অপসেট কাগজ ব্যবহার করে তাহলে সবশেষে সকল পরীক্ষণ শেষ হলে বাইন্ডিং করে মৌখিক পরীক্ষার সময় উপস্থাপণ করতে হবে। আর ব্যবহারিক খাতায় লিখলেতো কোন সমস্যাই নেই, একসাথেই সকল পরীক্ষণের রিপোর্টসমূহ থাকে। নিম্নে পরীক্ষণের রিপোর্ট লিখার একটি নমুনা দেয়া হলো-


পৃষ্ঠা--------------------------------------------------------

পরীক্ষণ নং----------------     তারিখ-------------------

পরীক্ষণের নাম------------------------------------------

তত্ত্ব -------------------------------------------------------

উপকরণ- ক) হার্ডওয়্যার ------------------------------

            খ) সফটও্যার ----------------------------------

কার্যপ্রণালী-----------------------------------------------

-------------------------- (একাধিক পৃষ্টা লাগতে পারে)

ফলাফল --------------------------------------------------

মন্তব্য / আলোচনা --------------------------------------

সাবধানতা ------------------------------------------------


এনসিটিবি ও শিক্ষাবোর্ড-এর নোটিশে বলা হয়েছে যে, ব্যবহারিক অংশে যন্ত্র/উপকরণ সংযোজন ও ব্যবহার/ প্রক্রিয়া অনুসরণ/ উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ/ অঙ্কন/ পর্যবেক্ষণ/ শনাক্তকরণ/ অনুশীলনের জন্য থাকবে ১৫ নম্বর, প্রতিবেদন প্রণয়ন ০৫ নম্বর এবং মৌখিক পরীক্ষার জন্য থাকবে ০৫ নম্বর। এবারে আমরা এর বিস্তারিত আরোচনা করব।-

ক। যন্ত্র বা উপকরণ সংযোজন ও ব্যবহার- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারিক অংশে একটি নির্ধারিত কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য যে সকল যন্ত্রপাতি প্রয়োজন হয়, সেসকল যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহার শিক্ষার্থীকে নিশ্চিত করতে হয়। এখানে যন্ত্রপাতি ব্যভহার বলতে হার্ডওয়্যার ও সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যারকে বুঝানো হয়েছে। কেননা হার্ডওয়্যারকে ব্যবহার করার জন্য সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়। তাই  ব্যবহারিকে বেশী নম্বর পাওয়ার জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যার চালাতে হবে।

খ। প্রক্রিয়া অনুসরণ- কম্পিউটারের সাহায্যে সমস্যা সমাধান বা নির্দিষ্ট কোন কাজের জন্য অনেক পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া প্রচলিত আছে। প্রচলি কোন একটি সহজ প্রক্রিয়া অনুসরণের জন্য নির্দিষ্ট কিছু ধাপে কার্য সম্পাদন করতে হয়। যেমন- ১. সমস্যা বিশ্লেষণ, ২. ডিজাইন বা পরিকল্পনা, ৩. উন্নয়ন বা কার্য সম্পাদন, ৪.  বাস্তবায়ন বা ফলাফল প্রদর্শন, ৫. রক্ষণাবেক্ষণ। এমন কোন একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে  ব্যবহারিক পরীক্ষণ সম্পন্ন করাই হলো প্রক্রিয়া অনুসরণ। 

গ। উপাত্ত সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণ- কম্পিউটারে ব্যবহারিক কার্য সম্পদনের জন্য অবশ্যই উপাত্ত সংগ্রহ একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেমন লেখালেখিতে, প্রেজেন্টেশন তৈরীতে, ছবি সম্পদনে যথাযথ ছবি, এ্যানিমেশন বা চার্ট সংগ্রহ করা, স্প্রেডশিটে, ডাটাবেজে তথ্য সংগ্রহ এবং ব্যবহার করতে হবে। যথাযথ উপাত্ত সংগ্রহ করে তা ব্যবহার করা ব্যবহারিক পরীক্ষণের জন্য অতি প্রয়েজনীয় বিষয়।

ঘ। অঙ্কন- ব্যবহারিকে চিত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যবহারিক খাতায় বা ফুলস্কেপ অপসেট কাগজে বাইন্ডিং করে যখন শিক্ষার্থীরা পরীক্ষণ রিপোর্ট লিখে, তখন অনেক শিক্ষার্থীরা প্রিন্ট করে বা কোন বই থেকে ছবি কেটে পেস্টিং করে থাকে। আসলে এমন করাটা উচিৎ নয়। কারণ ব্যবহরিক পরীক্ষণে চিত্র না আঁকাই সবচেয়ে ভাল। ব্যবহারিকের সাথে চিত্র অংকনই মানানসই, প্রিন্টিং পেস্টিং নয়।

ঙ। পর্যবেক্ষণ, শনাক্তকরণ ও অনুশীলন- ব্যবহারিকে সমস্যা সমাধানে পর্যবেক্ষণ, শনাক্তকরণ এবং অনুশীলন একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিক্ষকের দেয় পরীক্ষণসমূহ আইসিটি ল্যাবে পর্যবেক্ষণ ও অনুশীলণ করতে হবে এবং শিক্ষককে দেখাতে হবে পরামর্শ নিতে হবে, নির্দিষ্ট বিষয়সমূহ সনাক্ত করতে হবে। যা পর্যায়ক্রমে তা পরীক্ষণের শিটে লিখতে হবে।


মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণত ব্যবহারিক কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। তবে পরীক্ষক ইচ্ছা করলে পাঠ্য বই ও সিলেবাসের অর্ন্তগত যে কোন বিষয় থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন করতে পারেন। তাই সিলেবাসের বা পাঠ্য বইয়ের অন্তর্গত সকল বিষয়েই ভাল ধারনা থাকা প্রয়োজন। কাজেই ব্যবহারিক অংশের কাজ করার সময় সকল বিষয় ভালভাবে জানার চেষ্টা করতে হবে। তাছাড়া পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বশেষ তথ্য সম্পর্কে ধারনা নিতে হবে।